প্রতি মুহূর্তে আমার চিন্তার অস্তিত্বে জীবন আসে
আমাকে জীবন্ত করে, ক্রমে ক্রমে ক্ষয় হয়
ছাইয়ের মতো উৎক্ষিপ্ত হয় পুরনো জীবন
চিন্তার ডাস্টবিনে।
এই যে প্রাণের যাওয়া আসা
এই যে অস্তিত্বের বেঁচে থাকা
প্রতিনিয়ত এক যুদ্ধমান সত্তা
তারই মাঝে তুমি এলে বৈশাখ
তবে আমার অস্তিত্বের
প্রাণসঞ্চারী হয়ে এলে না।
তুমি ‘বাঙালী’ নাম নিয়ে এসেছো
আসলে সেটা তোমার ছদ্মবেশ
ঐ মিছিলের যুবক-যুবতির মতো
হাতি, বাঘ, কুমীর অথবা বাঁদরের মুখোশ যেনো।
বুঝেছি তখন, যখন আমার অস্তিত্বের প্রাণে
প্রচন্ড বজ্রাঘাত করে হত্যা করতে দেখছি তোমায়
আসলে তুমি ভন্ড, প্রতারক, নষ্ট, নীচ
নিকৃষ্ট এক স্বৈরাচারী কীট
তুমি এক দস্যু, লুটেরা, ডাকাত, ধর্ষক, খুনি
আমার অস্তিত রক্ষার যুদ্ধে তুমি যুদ্ধাপরাধী।
‘বাঙালী’ সংস্কৃতির আড়ালে
পৌত্তলিক শিরকের কলঙ্কিত কন্টক-তাজ
পরাতে চেয়েছ
চির-শাশ্বত পবিত্র তাওহীদের মস্তকে।
তুমি মাথার ঘোমটা ছিনিয়ে নিয়ে
আমার বোনের সিঁথিতে মেখেছো রক্তাক্ত সিঁদুর
বিবাহিতা পৌত্তলিকের আত্মপরিচয়।
পতিতার রক্তমাখা টিপ পরিয়েছো মায়ের কপালে।
ছিনিয়ে নিয়েছো আমার ভাইয়ের মাথার টুপি,
পাঞ্জাবী-পাজামা-
‘বাঙালী’ নামের ছদ্মাবরণে পরিয়েছো ধূতি
মুখে অমানুষের মুখোশ।
হে বৈশাখ! আমার অস্তিত্বের আত্ম-পরিচয়
তুমি লুণ্ঠন করেছ- ধর্ষণ করতে চলেছো
পদদলিত করে ছুঁড়ে ফেলছো
বাঙালীর মিথ্যা ছদ্মাবরণে।
তোমার নামে আমি মামলা করলাম
তোমাকে দাড় করালাম বিচারের কাঠগড়ায়
আমি চাই তোমার ফাঁসী হোক
তোমার গলিত পুতি দুর্গন্ধময় লাশের ভিতর থেকে
উঠে আসুক প্রকৃত পবিত্র বৈশাখ
যে আমার ভাইয়ের মাথার টুপি ফিরিয়ে দেবে
যে আমার বোনের মাথায় সম্মানের হেজাব পরাবে
তার অর্ধ-উলঙ্গ দেহ পবিত্রতায় ঢেকে রাখবে।
প্রতি পরতে পরতে চোখের পলকে পলকে
স্মরণ করিয়ে দেবে সৃষ্টিকর্তার নাম
যিনি সৃষ্টি করেছেন বৈশাখ, মেঘ-
আর মেঘ থেকে বারী বর্ষণ-
যিনি সৃষ্টি করেন কৃষকের মাঠজুড়ে অফুরন্ত ফসল!
বৈশাখের প্রথম দিনে শুভ-নববর্ষে
প্রার্থনা করি ‘শুভ নববর্ষ’ তাঁরই কাছে
যিনি রিজিক দেন, যিনি সম্পদ দেন
যিনি বাঁচিয়ে রাখেন, যিনি মৃত্যু দেন-
যার কাছে ফিরে যেতে হবে
সবাইকে একদিন
তার কাছে তোমার বিচারের ভার রইলো
হে ছদ্মবেশী যুদ্ধাপরাধী বৈশাখ!
No comments